মিরপুর এলাকায় ১২ লেন বিশিষ্ট অটোমেটিক ভেহিক্যাল ইন্সপেকশন সেন্টারের কাজ চলমান। এর মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৩০০ থেকে সাড়ে ৪০০ মোটরযানের ফিটনেস পরীক্ষা করা যাবে। আগামী জুলাইয়ে এর কাজ সম্পন্ন হবে।
গত রোববার (৩ জানুয়ারি) হাইকোর্টে দাখিল করা বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) পরিচালক (অপারেশন) শীতাংশু শেখর বিশ্বাসের স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ সংক্রান্ত রিট শুনানিতে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
এ দিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ। বিআরটিএ’র পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রাফিউল ইসলাম।
এর আগে অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর দেশের সড়ক পথগুলেোতে আনফিট গাড়ি চলছে কিনা তা পর্যবেক্ষণের জন্য দেশে যানবাহন ফিটনেস টেস্টিং সেন্টার বাড়ানোর জন্য নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
আইনজীবী তানভীর আহমেদ শুনানির বরাত দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে গাড়ির সংখ্যা অনুযায়ী ফিটনেস টেস্টিং সেন্টারের সংখ্যা খুবই কম। যেখানে উন্নত রাষ্ট্রে প্রায় ৪০ লাখ গাড়ির ফিটনেস টেস্টের জন্যে কমপক্ষে প্রায় ২০ হাজার সেন্টার রয়েছে। আর লাইসেন্স নবায়নের ব্যবস্থাও দেশে খুব কম। আমাদের দেশে ৬৪ জেলার লাইসেন্স ফিটনেস নিয়ে কাজ করার জন্য সেন্টার আছে, এর মধ্যে ঢাকায় একটু বেশি। যদি কোনো মালবাহী লড়ির চট্টগ্রামে গিয়ে সমস্যা হয় তার ফিটনেস নিয়ে সেখানে কোনো সমাধান করতে দেয়া হতো না। তাই সেটিও আদালতের নজরে এনেছিলাম। এমন বিষয়টি তুলে ধরার পরে এমন আদেশ দেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, আদালতে আজ বিআরটিএর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এখন ফিটনেস পরীক্ষায় অনলাইন করার কারণে দেশের যেকোনো জায়গা থেকে গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা নবায়ন করা সম্ভব।
গত ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ফিটেনেসবিহীন যান চলাচল বন্ধে বিবাদীদের কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে এবং ফিটনেসবিহীন যান চলাচল বন্ধে গণপরিবহনের ফিটনেস নিশ্চয়তা ও নজরদারিতে বিবাদীদের ব্যর্থতাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিব, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক, বিআরটিএ’র ইনফোর্সেমেন্ট বিভাগের পরিচালক ও পুলিশ মহাপরিদর্শককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
হাইকোর্টের অপর এক বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন আদেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার রিটটি শুনানিতে আসে।
এর আগে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে যানবাহনের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ফিটনেস জরিপে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যানকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। ১০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে যানবাহনের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ফিটনেস জরিপে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানাতে বলা হলেও তারা কোনও পদক্ষেপ নেননি। নোটিশের সাড়া না পেয়ে পরে ওই বছরের ২৬ জুলাই রিট আবেদন করা হয়।